করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অনেকটাই থমকে গেছে দেশের অর্থনীতি। যার ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আবাসন খাতে। আবাসন ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন, অনেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিপরীত চিত্র দেখা গেছে ব্যক্তিগত সম্পত্তি কেনাবেচার ক্ষেত্রে। করোনার এই সময়েও অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে এই খাত। নিবন্ধন অধিদপ্তরের গত ১২ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং আবাসন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

দেশে স্থাবর সম্পত্তি কেনাবেচা করলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দলিল করতে হয়। এসব দলিল থেকে মোটা অঙ্কের একটি রাজস্বও পায় সরকার। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলো নিবন্ধন অধিদপ্তরের আওতাধীন। কেন্দ্রীয়ভাবে নিবন্ধন অধিদপ্তর থেকেই সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

নিবন্ধন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ অর্থবছরে দেশে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৬৮ হাজার ৭২৯টি দলিল হয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ে ৪ কোটির বেশিবার স্থাবর সম্পত্তির (বিশেষ করে জমি ও ফ্ল্যাট, প্লট) হাতবদল হয়েছে। এই ১২ বছরে প্রতি মাসে গড়ে দলিল হয়েছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ২২৭টি। ১২ অর্থবছরে দলিল থেকে সরকারের মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ৯৩ হাজার ৭৪৯ কোটি ৫৬ লাখ ১২ হাজার ১০৪ টাকা। এই সময়ে প্রতি মাসে গড়ে রাজস্ব আয় ছিল প্রায় ৬৫১ কোটি ৪ লাখ টাকা।

 করোনার কারণে গত ২৫ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত নিবন্ধন অধিদপ্তরের দালিলিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। নিবন্ধন অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, গত ৩১ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে সারা দেশে ২ লাখ ৪৭ হাজার ৭৮০টি দলিল হয়েছে, মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ৫২৯ কোটি ৮১ লাখ ৫১ হাজার ৩৩৯ টাকা।

জানতে চাইলে নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহীদুল আলম বলেন, ‘দলিল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে করোনার প্রভাব কিছুটা পড়েছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক সময়ের মতোই কাজ করছি। স্বাস্থ্যবিধির কারণে কিছু বিধিনিষেধও মানতে হচ্ছে। এ জন্যও দলিলের সংখ্যাও কিছুটা কমতে পারে।’

বেশি ময়মনসিংহে, কম কক্সবাজারে

করোনাকালের নিবন্ধনের হিসাব অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি দলিল হয়েছে ময়মনসিংহ জেলায়। ঢাকা জেলার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। আর সবচেয়ে কম দলিল হয়েছে কক্সবাজার জেলায়।

অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, জুন মাসে ময়মনসিংহে ১০ হাজার ৪৪১টি দলিল হয়েছে। ঢাকায় হয়েছে ৯ হাজার ৮৩৭টি। এরপরই আছে কুমিল্লা ও বগুড়া জেলা। সবচেয়ে কম কক্সবাজার জেলায় হয়েছে ৪২৪টি দলিল।

ময়মনসিংহে দলিল বেশি হওয়ার কারণ সম্পর্কে জেলার একজন সাব-রেজিস্ট্রার নাম না প্রকাশের শর্তে বলেছেন, ময়মনসিংহ নতুন সিটি করপোরেশন হয়েছে। শহরও আগের চেয়ে উন্নত হচ্ছে, অবকাঠামো বাড়ছে। তাই জমিসহ অন্যান্য কেনাবেচাও বেড়েছে।

প্রতি মাসে সারা দেশে স্থাবর সম্পত্তির প্রায় তিন লাখ দলিল হয়। করোনাকালেও প্রায় একই হারে দলিল হচ্ছে।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Manila & Angeles City 5D/4N

মূল্য: 55,900 Taka

Cambodia (Phnom Penh & Siem Reap) 6D/5N

মূল্য: 43,900 Taka

দুবাই ও মিশর ৭দিন ৬ রাত

মূল্য: ৩৯,৯০০ টাকা

তবে চলতি মাসে আগের চেয়ে বেড়েছে ঢাকা জেলার দলিলের সংখ্যা। ঢাকা জেলার রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার জানিয়েছেন, গত ২৩ জুলাই পর্যন্ত তাঁর জেলায় ১১ হাজার ১২১টি দলিল হয়েছে। গত মার্চ মাসে (২৫ তারিখ পর্যন্ত) ঢাকা জেলা থেকে ২২ হাজার ৬৭৪টি দলিলের সার্টিফায়েড কপি সরবরাহ করা হয়েছে। আর জুলাই মাসের ২৩ দিনে দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৯১১টি।

ব্যক্তিগত সম্পত্তি কেনাবেচা

ঢাকা ও ঢাকার বাইরের একাধিক সাব-রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় তাঁরা দেখেছেন, প্রবাসী আয় ও কালোটাকার মালিকেরা স্থাবর সম্পত্তি বেশি কেনেন। করোনার সময়ে প্রবাসী আয় সেই তুলনায় কমেনি। পাশাপাশি এবারের বাজেটেও জমি বা ফ্ল্যাট কিনে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। ফলে কেনাবেচাও আগের মতোই হচ্ছে।

ফ্ল্যাট-প্লট বিক্রি কম

দেশে আস্ত বাড়ির পরিবর্তে ফ্ল্যাট এবং বড় আকারের জমির পরিবর্তে খণ্ড প্লটের সংস্কৃতির গোড়াপত্তন মূলত ঢাকায়। এই ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান। ব্যবসায়ীরা মিলে গড়েছেন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) ও বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশন (বিএলডিএ)। রিহ্যাবের ব্যবসা মূলত ফ্ল্যাট ও বিএলডিএর ব্যবসা মূলত প্লটকেন্দ্রিক।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঢাকার কাঠামো পরিকল্পনা (খসড়া) অনুযায়ী, ঢাকায় মোট আবাসের মাত্র ৭ শতাংশের জোগান দিয়েছে সরকার। ৫১ দশমিক ১৫ শতাংশ বাড়ি ব্যক্তি উদ্যোগে বানানো হয়েছে। বাকি ৪১ দশমিক ৮৫ শতাংশ ভবনই তৈরি করেছেন আবাসন ব্যবসায়ীরা।

বিএলডিএর মুখপাত্র নাসির মজুমদার জানিয়েছেন, ২০০৮ সালের পর থেকেই প্লট ব্যবসা পড়তির দিকে। কারোনাকালে এটি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পড়েছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৮০ ভাগ বিক্রি কমে গেছে।

কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কিংবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট-প্লট বা জমি কিনলে নিবন্ধন অধিদপ্তরের মাধ্যমে দলিল করতে হয়। কিন্তু অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, অবস্থা স্বাভাবিক হচ্ছে, দলিলের সংখ্যাও খুব বেশি কমেনি। এ সম্পর্কে নাসির মজুমদার বলেন, বেশির ভাগ প্লট ৮-১০ বছরের কিস্তিতে বিক্রি হয়। কিস্তি শেষ হলে দলিল করা হয়। তাই এখনকার প্লট বিক্রির রেখাপাত দলিলের সংখ্যায় পড়বে না। এখন যেসব সম্পত্তির দললি হচ্ছে, তার বেশির ভাগ ব্যক্তি পর্যায়ে কেনা জমির দলিল। প্রথম আলো

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।

কুইক সেল অফার

Online Shopping BD (Facebook Live)



৩৯৬ বার পড়া হয়েছে