ঢাকার কাজীপাড়ার আলম হোসেনের বাসায় গ্যাস বাবদ খরচ মাসে ৬০০ টাকার আশপাশে। অন্যদিকে ধানমন্ডির জসিম মল্লিকের ব্যয় ৯৭৫ টাকা। এটি নির্ধারিত, কোনো হেরফের হয় না। তালতলার মো. সলিমুল্লাহর গ্যাস বাবদ ব্যয় মাসে দেড় হাজার টাকার মতো।
আলম, জসিম ও সলিমুল্লাহ একই দেশের নাগরিক, একই শহরের বাসিন্দা। আলমের বাসায় গ্যাস বিতরণকারী সংস্থা তিতাস প্রি-পেইড মিটার বসিয়ে দিয়েছে। ফলে আলম যতটুকু গ্যাস ব্যবহার করেন, ততটুকুই বিল দেন। জসিম যতটুকুই ব্যবহার করেন না কেন, তাঁকে বিল দিতে হয় ৯৭৫ টাকা। এমনকি কোনো মাসে বাসায় কেউ না থাকলেও গ্যাসের বিল পুরো দিতেই হয়।
সলিমুল্লাহর বাসায় তিতাসের গ্যাসলাইন নেই। তাঁকে কিনতে হয় বেসরকারি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি), যার প্রতিটি সিলিন্ডারের (১২ কেজি) দাম ৯০০ টাকার মতো।বিজ্ঞাপন
দেশে তিতাসের মতো গ্যাস বিতরণকারী সরকারি ছয়টি কোম্পানির মোট গ্রাহক ৩৮ লাখ। তাঁদের মধ্যে দুই লাখের বাসায় প্রি-পেইড মিটার রয়েছে। বেসরকারি হিসাবে, এলপিজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩৫ লাখের মতো। এই তিন শ্রেণির মধ্যে কম খরচ তাঁদের, যাঁদের বাসায় প্রি-পেইড মিটারসহ তিতাসের গ্যাস–সংযোগ রয়েছে।
সরকারি কোম্পানির পাইপলাইনে গ্যাস ব্যবহারকারীদের বাসায় মিটার বসানো কঠিন কোনো কাজ নয়। কিন্তু ২০১৫ সালে উদ্যোগ নিয়ে মাত্র দুই লাখ গ্রাহককে মিটার দিতে পেরেছে তিতাস। অভিযোগ রয়েছে, মিটার বসালে বিপুল আয় হারাবে তিতাস। এ কারণে মিটার বসাতে অনীহা তাদের।
এদিকে এলপিজি ব্যবহার করলে খরচ বেশি হয়। বাসায় ভাড়াটে পাওয়াও কঠিন হয়। ফলে মানুষ ঘুষ দিয়ে অবৈধ প্রক্রিয়ায় গ্যাস–সংযোগ নেওয়ার দিকে ঝুঁকছে। তিতাসের নিজস্ব হিসাব বলছে, ঢাকা ও আশপাশের চার জেলায় গ্যাসের প্রায় ২৪৫ কিলোমিটার অবৈধ পাইপলাইন রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিতাসের কর্মীদের যোগসাজশে এসব গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হয়। আর বিভিন্ন এলাকায় বিল ভাগাভাগি করা হয়।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Kathmandu-Pokhara 5D/4N
Australia Visa (for Private Service Holder)
কানাডা ভিসা
প্রি-পেইড মিটার স্থাপন না করা পর্যন্ত গ্যাস খাতে চুরি কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না বলে উল্লেখ করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ম তামিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, প্রি-পেইড মিটার থাকা গ্রাহক ৪০ শতাংশ কম গ্যাস পোড়ান। একজন গ্রাহক কম পুড়িয়ে কেন বেশি গ্যাসের দাম দেবেন, এটি অন্যায়।বিজ্ঞাপন
৬০০ টাকার গ্যাসে ৯৭৫ টাকা বিল
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) দাম নির্ধারণকালে আবাসিকে দুই চুলার একজন গ্রাহক মাসে সর্বোচ্চ ৭৭ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করতে পারেন বলে ধরে নেয়। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ঘনমিটারের দাম ১২ দশমিক ৭ টাকা ধরে বিল নির্ধারণ করা হয় ৯৭৫ টাকা। অথচ একজন গ্রাহক মাসে ৪৫ থেকে ৫০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। যার দাম ৫৭০ থেকে ৬৩০ টাকা। একজন গ্রাহক যদি মাসে গড়ে ৩৩ ঘনমিটার গ্যাস কম ব্যবহার করেন, তাহলে তাঁর বাড়তি বিল দিতে হয় ৪১৬ টাকা। সেই হিসাবে ছয়টি কোম্পানির ৩৬ লাখ গ্রাহককে বছরে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বাড়তি বিল দিতে হচ্ছে, যা মিটার থাকলে দিতে হতো না।
গ্রাহকদের কম ব্যবহারের বিপরীতে বাড়তি বিল নিলেও দাম বাড়ানো থেমে নেই। গত বছরও এক দফা দাম বাড়ানো হয়। এর আগে দাম ছিল ৮০০ টাকা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন বাসাবাড়িতে দুই চুলার গ্যাসের দাম ছিল ৪৫০ টাকা।
Source: Prothomalo
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
২২৪ বার পড়া হয়েছে