মোটরসাইকেল শুনলেই আমাদের মাথায় নিজে থেকেই চলে আসে “হোন্ডা”। এখনো শুধু শহরেই নয়, বরং প্রত্যান্ত অঞ্চলে মোটরসাইকেল – সেটা যেই ব্র্যান্ডেরই হোক না কেনো, তাকে ডাকা হয় হোণ্ডা নামে। এবং, সারাবিশ্বেই মোটরসাইকেল এর ধারনাকে বদলে দিয়েছে ছোট্ট একটি বাইক, যেটাকে পৃথিবীর ইতিহাসে সেরা মোটরসাইকেল বলা হয়! বাইকটি হচ্ছে Honda Super Cub, এবং আজ আমরা কথা বলবো যে কিভাবে এই ছোট্ট একটি বাইক বদলে দিয়েছে সারাবিশ্বের মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রীকে!
সাল ১৯৫০। মোটরসাইকেল বলতে মানুষের মনে তখন স্থান করে নিয়েছে হার্লে ডেভিডসন, মোটো গুজ্জি, ইন্ডিয়ান মোটরসাইকেল এর মতো ব্র্যান্ডগুলো। মোটরসাইকেল মানেই তখন হয় বড় আকারের ক্রুজার বা চপার মোটরসাইকেল, বা সম্পূর্ন গতি নির্ভর রেসার।
সাল তখন ১৯৫৬, এ্বং সইচিরো হোণ্ডা কাজ শুরু করলেন তার স্বপ্নের মোটরসাইকেল নিয়ে। তিনি চেয়েছিলেন এমন একটি মোটরসাইকেল তৈরী করতে, যে হবে সকল প্রকার মানুষের জন্য। যেকোন পেশার নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য এই মোটরসাইকেলটি হবে শখ নয়, বরং প্রয়োজন।
সইচিরো হোন্ডা এর সরাসরি তত্বাবধানে খুব শীঘ্রই তৈরী হয়ে গেলো ডিজাইনটি, এবং ১৯৫৮ সালে সারাবিশ্ব দেখলো এমন এক মোটরসাইকেল, যা তৈরী করতে চলেছে ইতিহাস!
১৯৫৮ সালের Honda Super Cub ছিলো ছোটখাটো গড়নের একটি মোটরসাইকেল। এর সামনে পেছনে ছিলো ১৭ ইঞ্চি সাইজের স্পোক হুইল, সামনে ছিলো একটি গোল হেডলাইট এবং এনালগ স্পীডোমিটার, এবং ৪৯ সিসির ইঞ্জিনটি বসানো ছিলো চ্যাসিসের মূল স্পাইন এর নিচে। চ্যাসিসের নিচে এভাবে ইঞ্জিন বসানোকে আন্ডারবোন সেটাপ বলা যায়।
বাইকটির বাকি ডিজাইন সম্পর্কে খুব বেশি কিছু বলার নেই, কারন ১৯৫৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই মোটরসাইকেলটি বিশ্বের ইতিহাসে সবচাইতে বেশি বিক্রিত মোটরসাইকেল, এবং এই মোটরসাইকেল দেখেননি এমন মানুষ খুব বেশি নেই। Honda Super Cub এর অন্যতম ভিন্নধর্মী ফিচার হচ্ছে এর ক্লাচবিহীন ইঞ্জিন!
ইঞ্জিন, ক্লাচ, ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন – এই জিনিসগুলো মোটরসাইকেল এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কিন্তু, এই ধারনাকে আমূল বদলে দিয়েছে Honda Super Cub. হোন্ডা সুপার কাব বাইকে ছিলো চিরাচরিত ৩ গিয়ারের একটি ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন, কিন্তু এতে দেয়া হয়নি কোন ম্যানুয়াল ক্লাচ! হোন্ডা এর ঘোষনা অনুযায়ী, বাইকের রাইডিং আরো বেশি সহজ করার জন্যই এতে অটোমেটিক ক্লাচ ব্যবহার করা হয়েছে। এবং, এরফলে সকল শ্রেনীর বয়সের মানুষের কাছে বাইকটি রাইড করা আরো অনেক বেশি সহজ হিয়ে গিয়েছে।
ফিচার বিজ্ঞাপন
SIliguri – Gangtok – Lachung (Sikkim) 7D/6N
বেইজিং ও কুনমিং ৭ দিন ৬ রাত
চায়না বাঁধ সিরাজগঞ্জ প্রাইভেট ডে লং ট্যুর
হোন্ডা কাব বাইকটি মূলত ডেভেলপ করা হয়েছে সকল স্তরের সকল মানুষের নিত্যদিনের বাহন হিসেবে। তখনকার সময়ে সকলের কাছে মোটরসাইকেল জনপ্রিয় করার জন্য হোন্ডা বেশ কিছু আইকনিক বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে, যার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে হোন্ডা এর ট্যাগলাইন। “You Meet The Nicest People On A Honda” বাংলা করলে দাঁড়ায়, আপনি সবচাইতে ভালো মানুষদের হোন্ডা চালাতে দেখবেন। এছাড়াও তারা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নারী বাইকারদের অনুপ্রেরিত করে বাইক রাইড করে চলাফেরা করতে। মূলত তাদের বিজ্ঞাপনে এবং হোন্ডা সুপার কাবএর ডিজাইনের মাধ্যমে প্রচুর পরিমানে নারী রাইডার বাইক চালানো শুরু করেন, যা আজও বলবৎ রয়েছে!
হোন্ডা এর এই মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এখনো সারাবিশ্বে অন্যতম আইকনিক মার্কেটিং ক্যাম্পেইন হিসেবে স্বীকৃত, এবং এখনো মার্কেটিং এর ছাত্র-ছাত্রীদের এই ক্যাম্পেইনটি এবং শ্লোগানটি সম্পর্কে পড়ানো হয়।
Honda Super Cub বাইকটি নিজের যাত্রার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত মানুষকে দিয়েছে এমন একটি বাইকের স্বাদ, যা এর আগে কেউ কখনো পায়নি। এটি এমন একটি মোটরসাইকেল, যা মানুষকে তার নিত্য প্রয়োজনীয় সকল কাজ করা থেকে শুরু করে যাতায়াত, মালপত্র বহন, শখের বশে ভ্রমন, এবং একটি মোটরসাইকেল দিয়ে যা কিছু করা সম্ভব এবং সম্ভব নয়, সকল কিছুতেই রাইডারকে দিয়ে গেছে এবং দিয়ে যাচ্ছে সম্পূর্ন সাপোর্ট!
এবং এসকল কারনেই Honda Super Cub পৃথিবীর সবচাইতে লম্বা সময় ধরে প্রোডাকশন হওয়া মোটরসাইকেল সিরিজ, সবচাইতে বেশি জনপ্রিয় এবং সবচাইতে বেশি বিক্রিত মোটরসাইকেল, এবং এই একটি মোটরসাইকেল বদলে দিয়েছে পুরো পৃথিবীকে!
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
Online Shopping BD (Facebook Live)১,১৬৬ বার পড়া হয়েছে