আপনি যখন সেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করতে যাচ্ছেন, তখন আপনার পরিবার, বন্ধুরা, আপনার পরিচিত যারা সেনজেন দেশগুলোতে আছেন, আপনার পরিচিত ভিসা কলসাল্ট্যান্টরা, ট্রাভেল এজেন্টরা আপনাকে নিরুৎসাহিত করবে। শুধু পাশের মানুষের নেগেটিভ কথা শুনতে শুনতেই আপনার সেনজেন ভিসার আবেদনের আগ্রহই শেষ হয়ে যাবে । সেনজেন ভিসার আবেদনের শুরুতে অন্তত শতবার আপনাকে শুনতে হবে যে, এটা তুমি পারবে না, তোমার দ্বারা হবে না, তোমার দ্বারা সম্ভব না, এটা খুব কঠিন, এটা খুব অসম্ভব, এভাবে হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি। ফলে যে উদ্দিপনা নিয়ে আপনি সেনজেন ভিসার আবেদন শুরু করতে চেয়েছিলেন, আপনার সেনজেন ভিসার আবেদনের আগ্রহই শেষ হয়ে যাবে । শুধু মনে রাখবেন কেউ যখন বলবে যে তুমি সেনজেন ভিসা পাবে না। তখন সে আসলে তার নিজের অপারগতাকেই উপস্থাপন করে। সে নিজে সেনজেন ভিসার আবেদন করে পায়নি বলেই সে বিশ্বাস করে আপনিও সেনজেন ভিসা পাবেন না। যদি সত্যিই সেনজেন ভিসা পেতে চান তবে এই ধরণের মানুষদের উপেক্ষা করার মত ক্ষমতা আপনার থাকতে হবে। এটা খুব জরুরী। যত তাড়াতাড়ি এই নেগেটিভ চিন্তার মানুষদের আপনি উপেক্ষা করতে পারবেন আপনার সেনজেন ভিসা পাবার সম্ভাবনা ততোটাই নিশ্চিত।

ইউরোপ কেমন?
আসলে বাংলাদেশের সবজায়গায় ই যাওয়া হইছে, ইন্ডিয়াও মোটামুটি সব জায়গায় ঘুরছি। কিন্তু নেশা মিটে না, কিন্তু আপনি যদি ইউরোপ আসেন, আপনার ভ্রমনের সব নেশে কেটে যাবে। এতই সুন্দর ইউরোপ এক একটা দেশ যা আপনি না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না। ইউরোপ এর যেসব দেশ এ টুরিস্ট ভিসা দেয় , সেই সবগুলো দেশ থেকেই আপনি ভিসা পেতে পারেন। তবে আবেদন করার আগে আপনাকে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

প্রথমত: ইন্টারভিউ– ইউরোপের ভিসার ক্ষেত্রে এম্বাসিতে ইন্টারভিউটা আপনার ৫০% এগিয়ে দিবে। কেন যাবেন, কোথায় যাবেন এইরকম প্রশ্নগুলোর উত্তর খুব গ্রহণযোগ্য ভাবে প্রস্তুত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে যারা আগে ভিসা পেয়েছে , তাদের সাহায্য নিতে পারেন।

দ্বিতীয়: ভাষা– ইউরোপ এ আপনি ঘুরতে হলে আপনাকে অব্যশই ভাষা জানতে হবে। প্রত্যেক দেশেরই নিজস্ব ভাষা আছে। তবে আপনি যদি ইংরেজী জানেন তাহলে কোন জায়গায়ই আটকাবেন না। এবার আসুন কতুটুকু জানতে হবে? মোটামুটি জানলে ই কি হবে? না, আপনাকে এক্সপাটই হতে হবে। কারন , অনেক দেশের ভিসার জন্য এম্বাসিতে আপনাকে ইন্টারভিউ দিতে হবে। আবার ইমিগ্রেশন এ ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। আর সেটা ইংরেজীতে । সুতরাং বুঝতে ই পারছেন। আপনি যত ফ্লুয়েন্টলি উত্তর দিতে পারলে ই কনসুলার বুঝতে পারবে যে, আপনি ইউরোপে চলতে পারবেন। এক্ষেত্রে কারও IELTS থাকলে শো করতে পারেন।

তৃতীয়ত: ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট– এইটাও আপনার ভিসার ক্ষেত্রে অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ । কারণ ইউরোপের থাকাখাওয়া অনেকটাই ব্যায়বহুল। এইটাও কোন ব্যাপার না। ব্যাপার হল আপনি যত বেশি ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট দেখাতে পারবেন এইটা আপনার ক্রেডিট। আবার অনেক এম্বাসেডর টাকার উৎস সম্পর্কেও জানতে চায়। সুতরাং সেইজন্যও একটা ভাল উত্তর প্রস্তুত করে রাখতে হবে।অরজিনাল ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট রিস্ক মুক্ত।

চতুর্থ : রেফারেন্স– যদিও এটা এত একটা জরুরী না, কিন্তু আপনি দেখাতে পারলে আপনারই লাভ। কারন ইউরোপে অনেকেরই ভাইবোন বা আত্মীয় সজ্বন আছে। আপনি ওদের রেফারেন্স দিতে পারেন।

পঞ্চম : টুরিস্ট– অনেকেই বলে আপনি যদি আপনাকে অরজিনাল টুরিস্ট বুঝাতে চান তাহলে আগে এশিয়ার ২/৩ দেশ ঘুরে তারপর ইউরোপে আবেদন করা ভাল। হা, এই কথাটাও সত্য, কিন্তু আপনি যদি কোনদেশ ভ্রমন না করেন তাহলেও কিন্তু আপনি আবেদন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপানাকে উপরের সবগুলো বিষয় পাকাপোক্ত ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

ষষ্ঠ: হেলথ এন্ড ট্যাভেল ইন্সুরেন্স– যদিও এটা বাধ্যবাধকতা নেই, তবে আপনার ফাইল ভারি করতে সাহায্য করবে।

এবার আসুন কোন দেশগুলোতে আবেদন করতে পারেন:
আসলে প্রথমেই বলেছি, আপনি উপরের সবগুলো বিষয় খেয়াল করে সবদেশেই আবেদন করতে পারেন। তবে ছোট দেশগুলাতে ভিসা পাওয়ার সম্ভবনা বেশি। যেমন: লিথুনিয়া, লাটভিয়া, পোলেন্ড, বেলজিয়াম, স্লোভাকিয়া এইসব দেশগুলোতে ভিসা পাওয়ার সম্ভনা বেশি। আর সবগুলোর ভিসা ফি- “২০-২৫” হাজার টাকার মধ্যে এবং আরও কম ও আছে কিছু এম্বাসিতে। চিন্তার কোন কারন নাই, আপনি যে কোন একটা দেশের ভিসা পেলেই জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স সহ সব সেনজেন দেশগুলো ঘুরতে পারবেন। আর বেশিরভাগ দেশেরই এম্বাসি ইন্ডিয়ায়। এই বিষয়টাও মাথায় রাখতে হবে।

কিভাবে আবেদন করবেন:
আসলে বাংলাদেশের বেশির ভাগ এজেন্সিই ভাল না। সেক্ষেত্রে যারা ইউরোপের টুরিস্ট ভিসা আবেদন করছেন এবং ভিসা পাইছেন এইরকম প্রমান আছে তাদের সহযোগীতা নিতে পারেন। আর প্রত্যেক দেশেরই এম্বাসির ওয়েবসাইটে তাদের ভিসা পাওয়ার সব তথ্য দেওয়া আছে। যারা বেশি এক্সর্পাট তারা নিজে নিজে আবেদন করতে পারেন।

Featured Product

চায়না ভিসা (বিজনেসম্যান)

মূল্য: ১০,০০০ টাকা

সেনজেন দেশগুলোর ভিসা প্রসেসিং নিয়ে অগনিত মেসেজ ( সকলের প্রশ্নের ধরণ ৯৯% একই) যারা দিয়েছেন পোষ্টটি তাদের জন্যঃ
যারা সেনজেন দেশগুলোতে বিভিন্ন কারণে যেতে চান।
যারা সেনজেন দেশগুলোর দূতাবাসগুলোতে ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। এবং
সেইসব সৌভাগ্যবান ব্যক্তিরা যারা, সেনজেন দেশগুলোর দূতাবাসগুলোতে ভিসার জন্য আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।
প্রত্যাখ্যাত আবেদনকারিদেরকে আমি সন্মান ও আন্তরিকতার সাথে সৌভাগ্যবান বলছি এই জন্য যেঃ
— প্রত্যাখ্যাতদের জন্যই পরবর্তী সফলতা অপেক্ষা করছে হাসিমুখে।
— প্রথম সুযোগেই সফল ব্যাক্তির পরবর্তী ব্যর্থতা আসে অত্যন্ত করুণভাবে, যা মোকাবিলা করতে প্রথম সুযোগেই সফল ব্যাক্তিরা ব্যর্থ হয় চরমভাবে।
— ব্যর্থ ও প্রত্যাখ্যাত ব্যাক্তির পরবর্তী সাফল্য আসে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে এবং পরবর্তী ব্যর্থতাগুলো সে তার নিজের অতীত অভিজ্ঞতার কারনে মোকাবিলা করতে পারে সফলভাবে, তার ভিত্তি হয় মজবুত, বেড়ে যায় দক্ষতা, সহিষ্ণুতা আর ধৈর্যসহ অভিজ্ঞতা। কমপক্ষে এরকম আরও ৯৭ টা পজিটিভ কারণ আছে আমাদের কাছে প্রত্যাখ্যাত ব্যাক্তিদের সৌভাগ্যবান বলার। আশা করি প্রশ্নের উত্তরগুলো পেয়ে যাবেন।

ভিসা ফিঃ ( ফি অফেরতযোগ্য ):
প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০০০ টাকা।
৬ থেকে ১২ বছরের জন্য ২৯০০ টাকা।
০ থেকে ৬ বছরের জন্য ভিসা প্রয়োজন নেই।
প্রতি আবেদনের ক্ষেত্রে ভ্যাট সহ অতিরিক্ত ১৭ ইউরো পরিমাণের ১৪১৭ টাকা সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য।
ভিসা ফি ঢাকাতে অবস্থিত সুইডেন ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টারের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বুথে এমব্যাসি অফ সুইডেন এ নগদ প্রদান করতে পারবেন, পেমেন্ট প্রসেসিং ফি বাবদ নমিনাল ফি ২৩০ টাকা (ভ্যাটসহ) ।
সকল ভিসা ফি, ভিএফএস সার্ভিস চার্জ এবং সকল অতিরিক্ত সেবা সমুহের চার্জ নগদ বাংলাদেশী টাকায় ( ভ্যাটসহ) প্রদান করতে হবে।
সুইডেন ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টারের অতিরিক্ত সেবা সমুহঃ
ফটোকপিঃ ৩ টাকা
এসএমএস সার্ভিসঃ ১৫০ টাকা
ফটো বুথ সার্ভিসঃ ৪ কপির জন্য ১৫০ টাকা

ফটো স্পেসিফিকেশনঃ
পাসপোর্ট স্টাইল এবং ৩৫x ৪৫ এম এম
কালার
সাম্প্রতিক এবং সত্যিকারের সাদৃশ্য
পুরো মুখমণ্ডল
শিরস্ত্রাণ ছাড়া
হিজাব বা টুপি শুধুমাত্র ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে গ্রহণযোগ্য, এবং এমনকি তারপরও আবেদনকারীর মুখের অংশ আবরণবিহীন থাকতে হবে।
প্লেইন, সমানভাবে আলো এবং হালকা ব্যাকগ্রাউন্ড

প্রসেসিং এর সময়ঃ
সাধারণত ৭-১০ কার্যদিবস, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এক মাস (বা তারও বেশি) পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

বাংলাদেশ হাই মাইগ্রেশন প্রেসার ভুক্ত একটি দেশ। দুর্ভাগ্যবশত, প্রায় ক্ষেত্রে আবেদনকারীরা বিজনেস / ট্যুরিজ্‌ম / ভিজিট ট্রিপ এ গিয়ে সেনজেন দেশগুলোতে গিয়ে অননুমোদিতভাবে থেকে যায়।
সেনজেন দেশগুলোর দূতাবাসগুলো তাই প্রতিটি ভিসা অ্যাপ্লিকেশন খুবই প্রফেশনাল্ভাবে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পরীক্ষা করে এবং আবেদনকারীর সাথে সংশ্লিষ্ট নানা ধরনের অসংখ্য ডকুমেন্টস জমা দিতে বলে, যে ডকুমেন্টসগুলো আবেদনকারীর তার নিজ বসবাসরত দেশে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থানকে পরিষ্কারভাবে আর তার ভিসা আবেদনের যৌক্তিকতাসহ আবেদনকারীর সংশ্লিষ্ট দেশে যাওয়ার কারণকে নিঃশর্তভাবে তুলে ধরে।
এই উদ্দেশ্যে, সেনজেন দেশগুলোর দূতাবাসগুলো আবেদনকারীর সাথে একটি ব্যক্তিগত সাক্ষাত্কারের ও ব্যবস্থা করা হয়।

যদি ইন্টারভিউয়ের ফলাফলগুলি জমাকৃত ডকুমেন্টসগুলোর ( প্রমাণীকরণ প্রমাণপত্রাদি প্রয়োজন) সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তবেই শুধুমাত্র যারা বিশ্বাসযোগ্য ভিসা আবেদনকারী ( সেনজেন দেশ থেকে নিজ দেশে ফেরত ইচ্ছুক) দূতাবাসগুলো তাদের ভিসা প্রদান বিবেচনা করে।
যাদের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান হয়েছে, ভিসা দিতে অস্বীকৃতির ভিত্তিতে যে ব্যাখ্যা, আবেদনকারীরা দূতাবাস থেকে তার লিখিত বিজ্ঞপ্তি পাবেন। আবেদনকারী বা তার অনুমোদিত প্রতিনিধি লিখিতভাবে এই নেতিবাচক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার / পুনঃনিরীক্ষণ এর আবেদন ( রিফিউজ এর ভিত্তিগুলো বিবেচনা করে ) করতে পারেন। এই উদ্দেশ্যে, আবেদনকারী বা তার প্রতিনিধির ব্যক্তিগত স্বাক্ষর সহ একটি পুনর্বিবেচনার / পুনঃনিরীক্ষণ এর চিঠি ( রিফিউজ এর ভিত্তিগুলো বিবেচনা করে ) দূতাবাসে জমা দিতে হবে।

প্রাথমিক আবেদন প্রক্রিয়ার অধীনে এখনো যে সাপোর্টিং নথিগুলো দেওয়া হয়নি
পুনর্বিবেচনার / পুনঃনিরীক্ষণ এর চিঠির সাথে সেগুলো সংযুক্ত করতে হবে।

বাংলাদেশ থেকে সেনজেন ভিসা পেতে প্রয়োজন শুধুমাত্র দুটি বিষয়ঃ
১। ভিসা আবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ধরণের কাগজ পত্র দেওয়া ( অপ্রয়োজনীয়, ফেক, আরটিফিসিয়াল ও ফেব্রিকেটেড কোন কাগজ আবেদনের সাথে দিবেন না) ।
২। ভিসা ইন্টারভিউতে সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া ( আপনার প্রতিট উত্তরই আবেদনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে, মনে রাখবেন আপনি যে উত্তর সঠিক মনে করছেন, সেটি আপনার আবেদনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে, আপনি রিফিউজ হবেন )।


৩৪১ বার পড়া হয়েছে